দেখতে দেখতে কেটে যাচ্ছে বারাকাহ পূর্ণ রমাদানের এক একটি দিন। রমাদানের বিদায় ও ঈদের আগমনের সন্ধিক্ষণ কড়া নাড়ছে দরজায়। রমাদানে সিয়ামকে ফরজ করা হয়েছে তাক্বওয়া অর্জনের একটি মাধ্যম হিসেবে। আল্লাহ তায়া’লা বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি সিয়ামকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগের লোকেদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাক্বওয়া অবলম্বন করতে পার। [১]
পুরো বছরের মধ্যে রমাদানের শেষ দশক একজন মু’মিনের কাছে বহু প্রতীক্ষিত। কেননা এর মাঝেই রয়েছে লাইলাতুল ক্বদর, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। কুরআন অবতীর্ণের এই মহান রাতের ইবাদত নিয়ে তাই আমাদের প্রস্তুতিও ভিন্ন হওয়া দরকার।
أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ”مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ”
আবু হুরায়রাহ্ (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমাদান মাসে ঈমান ও একান্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে সিয়াম পালন করবে তার পূর্ববর্তী সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতে ঈমানসহ ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে সলাত আদায় করবে তারও পূর্ববর্তী সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে।” [২]
শেষ দশকে লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণের পাশাপাশি অন্যতম একটি ইবাদত হচ্ছে ই’তিকাফ। ই’তিকাফের মাধ্যমে রমাদানের উদ্দেশ্য এবং মাকসাদ পূর্ণতা লাভ করে। ইবাদত করার ক্ষেত্রে একাগ্রতা এবং একনিষ্ঠতা আবশ্যক হলেও প্রায়ই সেটা ছুটে যায়, যার কিছুটা অনুশীলন ই’তিকাফের মাধ্যমে করা হয়।
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ فَسَافَرَ عَامًا فَلَمَّا كَانَ مِنْ الْعَامِ الْمُقْبِلِ اعْتَكَفَ عِشْرِينَ يَوْمًا
উবাই বিন কা’ব (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (স) রমাদানের শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করতেন। তবে তিনি কোন এক বছর এ সময় সফরে অতিবাহিত করেন। এরপর পরবর্তী বছর তিনি বিশ দিন ই‘তিকাফ করেন। [৩]
শেষ দশকের প্রস্তুতি ও ই’তিকাফের বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে আল ঈল্ম-উন-নাফি একাডেমির স্পেশাল আয়োজন “ই’তিকাফ ও শেষ দশকের ইবাদত”।
তথ্যসুত্রঃ
[১] সুরা আল-বাক্বারা : ১৮৩
[২] সহিহ বুখারী, ২০১৪
[৩] সুনান ইবনে মাজাহ, ১৭৭০। শাইখ আলবানীর মতে সহিহ।