যাকাত

আল-কুরআনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী জাতিদের যে ইবাদত সম্বন্ধে আমরা জানতে পারি, তন্মধ্যে “যাকাত” অন্যতম। আমাদের শরীয়তেও সম্পদ হতে নির্দিষ্ট পরিমাণে যাকাত দেওয়াকে আবশ্যক করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বনী ইসরাঈল জাতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
وَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱرْكَعُوا۟ مَعَ ٱلرَّكِعِينَ
তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু কর। [১]

আধুনিক পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় শোষিত হয় সমাজের এক শ্রেণির মানুষ, তাদের ওপর ভিত্তি করে আরেক শ্রেণি জমায় অর্থের পাহাড়। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাঝে স্বাভাবিক মানবিক আচরণও হারিয়ে যেতে দেখা যায়। এই বিভক্তি রোধ করার একটি উপায় হলো যথাযথ পদ্ধতিতে যাকাত আদায় করা। আবু মালিক আশয়ারী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন,
‎   عَنْ أَبِي مَالِكٍ الأَشْعَرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “وَالصَّلاَةُ نُورٌ وَالزَّكَاةُ بُرْهَانٌ وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا”‏
সালাত হলো নূর, যাকাত হলো দলীল, ধৈর্য হলো আলোকমালা এবং কুরআন হলো তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষের প্রমাণ। প্রত্যেক মানুষ ভোরে উপনীত হয়ে নিজেকে বিক্রয় করে, এতে সে হয় তাকে মুক্ত করে অথবা ধ্বংস করে। [২]

যাকাত একটি অর্থনৈতিক ইবাদত। অনেকে এটিকে অভাবীদের প্রতি দয়া করা হিসেবে দেখে থাকেন। এটি সঠিক নয়, বরং এটি দরিদ্রদের অধিকার। তাদের অধিকার যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَفِىٓ أَمْوَٰلِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّآئِلِ وَٱلْمَحْرُومِ
এবং তাদের ধন-সম্পদে রয়েছে অভাবী ও বঞ্চিতদের অধিকার। [৩]

যাকাতের মাধ্যমে আমাদের সম্পদ পবিত্র হয়। এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে আমরা কম-বেশি জ্ঞাত থাকলেও যাকাতের শরীয়ী হিসাব ও ক্ষেত্রের ব্যাপারে আমাদের জানা-শোনা অত্যন্ত সীমিত।

উক্ত প্রয়োজনকে সামনে রেখে আল ঈল্ম-উন-নাফি একাডেমি আয়োজন করছে “যাকাত” বিষয়ক একটি বিশেষ আলোচনা রয়েছে। যার মাধ্যমে আমরা মুসলিম ভাই-বোনদের যাকাতের বিষয়ে জানতে সহায়তা করতে পারি, যা সাদাকায়ে জারিয়াহ হিসেবে আমাদের উপকার করবে ইনশাআল্লাহ।

তথ্যসূত্রঃ
[১] সুরা আল-বাক্বারা : ৪৩
[২] সুনান ইবনে মাজাহ ২৮০, শাইখ আলবানীর মতে সহিহ।
[৩] সুরা আয-যারিয়াত : ১৯

Shopping Cart
Scroll to Top